Kamalini is one of the leading exponents of Rabindranath Tagore’s songs, known in India and Bangladesh as “Rabindra Sangeet”. She has been trained from an early age at Dakshinee, a leading Rabindrasangeet academy in Kolkata, India.
Over the last 11 years she has performed extensively in India, US, Canada, and Bangladesh, and has been a regular face on Bengali television in India, Bangladesh, and the Bengali diaspora across the globe, including the US. In 2013 she went to Mauritius on a mission to teach and spread Tagore’s music in that country on a joint initiative between the Govt. of Mauritius and UNESCO, in commemoration of Tagore’s 150th birth anniversary. She has given a solo concert for the President of India, Sri Pranab Mukherjee, at Rashtrapati Bhavan (Indian Presidential Palace) in 2015. She has had solo and group performances at the North American Bengali Conferences (NABC) in 2013 in Toronto, and in 2016 in New York City. She sang for the 2005 movie Nishijapon, directed by Sandip Ray
মধুর, তোমার শেষ যে না পাই প্রহর হল শেষ-
ভুবন জুড়ে রইল লেগে আনন্দ-আবেশ ।।
দিনান্তের এই এক কোনাতে সন্ধ্যামেঘের শেষ সোনাতে
মন যে আমার গুঞ্জরিছে কোথায় নিরুদ্দেশ ।।
সায়ন্তনের ক্লান্ত ফুলের গন্ধ হাওয়ার ‘পরে
অঙ্গবিহীন আলিঙ্গনে সকল অঙ্গ ভরে ।
এই গোধূলির ধূসরিমায় শ্যামল ধরার সীমায় সীমায়
শুনি বনে বনান্তরে অসীম গানের রেশ ।।
আমার জ্বলে নি আলো অন্ধকারে,
দাও না সাড়া কি তাই বারে বারে ।
তোমার বাঁশি আমার বাজে বুকে কঠিন দুখে, গভীর সুখে-
যে জানে না পথ কাঁদাও তারে ।।
চেয়ে রই রাতের আকাশ-পানে,
মন যে কী চায় তা মনই জানে ।।
আশা জাগে কেন অকারণে আমার মনে ক্ষণে ক্ষণে,
ব্যথার টানে তোমায় আনবে দ্বারে ।।
মোর পথিকেরে বুঝি এনেছ এবার মোর করুণ রঙিন পথ !
এসেছে এসেছে আহা অঙ্গনে এসেছে, মোর দুয়ারে লেগেছে রথ ।।
সে যে সাগরপারের বাণী মোর পরানে দিয়াছে আনি, আহা,
তার আঁখির তারায় যেন গান গায় অরণ্যপর্বত ।।
দুঃখসুখের এ পারে, ও পারে, দোলায় আমার মন-
কেন অকারণ অশ্রুসলিলে ভরে যায় দু’নয়ন ।
ওগো নিদারুণ পথ, জানি- জানি পুন নিয়ে যাবে টানি, আহা,
তারে- চিরদিন মোর যে দিল ভরিয়া যাবে সে স্বপনবৎ ।।
তুমি যে চেয়ে আছ আকাশ ভ’রে,
নিশিদিন অনিমেষে দেখছ মোরে ।।
আমি চোখ এই আলোকে মেলব যবে
তোমার ওই চেয়ে-দেখা সফল হবে,
এ আকাশ দিন গুনিছে তারি তরে ।।
ফাগুনের কুসুম-ফোটা হবে ফাঁকি
আমাই এই একটি কুঁড়ি রইলে বাকি ।
সে দিনে ধন্য হবে তারার মালা
তোমার এই লোকে লোকে প্রদীপ জ্বালা
আমার এই আঁধারটুকু ঘুচলে পরে ।।
না, না গো না,
কোরো না ভাবনা-
যদি বা নিশি যায় যাব না, যাব না ।।
যখনি চলে যাই আসিব ব’লে যাই,
আলোছায়ার পথে করি আনাগোনা ।।
দোলাতে দোলে মন মিলনে বিরহে ।
বারে বারেই জানি তুমি তো চির হে ।
ক্ষণিক আড়ালে বারেক দাঁড়ালে
মরি ভয়ে ভয়ে পাব কি পাব না ।।
তোমার কথা হেথা কেহ তো বলে না, কের শুধু মিছে কোলাহল
সুধাসাগরের তীরেতে বসিয়া পান করে শুধু হলাহল ।।
আপনি কেটেছে আপনার মুল- না জানে সাঁতার, নাহি পায় কুল,
স্রোতে যায় ভেসে, ডোবে বুঝি শেষে, করে দিবানিশি টলোমল্ ।।
আমি কোথা যাব, কাহারে শুধাব, নিয়ে যায় সবে টানিয়া ।
একেলা আমারে ফেলে যাবে শেষে অকুল পাথারে আনিয়া ।
সুহৃদের তরে চাই চারি ধারে, আঁখি করিতেছে ছলোছল্ ।
আপনার ভারে মরি যে আপনি, কাঁপিছে হৃদয় হীনবল ।।
তুমি ডাক দিয়েছ কোন্ সকালে কেউ তা জানে না,
আমার মন যে কাঁদে আপন-মনে কেউ তা মানে না ।।
ফিরি আমি উদাস প্রাণে, তাকাই সবার মুখের পানে,
তোমার মতো এমন টানে কেউ তো টানে না ।।
বেজে ওঠে পঞ্চমে স্বর, কেঁপে ওঠে বন্ধ এ ঘর,
বাহির হতে দুয়ারে কর কেউ তো হানে না ।
আকাশে কার ব্যাকুলতা, বাতাস বহে কার বারতা,
এ পথে সেই গোপন কথা কেউ তো আনে না ।।
তুমি ছেড়ে ছিলে, ভুলে ছিলে ব’লে হেরো গো কী দশা হয়েছে-
মলিন বদন, মলিন হৃদয়, শোকে প্রাণ ডুবে রয়েছে ।।
বিরহীর বেশে এসেছি হেথায় জানাতে বিরহবেদনা ;
দরশন নেব তবে চ’লে যাব, অনেক দিনের বাসনা ।।
‘নাথ নাথ’ ব’লে ডাকিব তোমার, চাহিব হৃদয়ে রাখিতে-
কাতর প্রাণের রোদন শুনিলে আর কি পারিবে থাকিতে ?
ও অমৃতরূপ দেখিব যখন মুছিব নয়নবারি হে-
আর উঠিব না, পড়িয়া রহিব চরণতলে তোমারি হে ।।
চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙ্গেছে, উছলে পড়ে আলো ।
ও রজনীগন্ধা, তোমার গন্ধসুধা ঢালো ।।
পাগল হাওয়া বুঝতে নারে ডাক পড়েছে কোথায় তারে-
ফুলের বনে যার পাশে যায় তারে লাগে ভালো ।।
নীল গগনের ললাটখানি চন্দনে আজ মাখা,
বাণীবনের হংসমিথুন মেলেছে আজ পাখা ।
পারিজাতের কেশর নিয়ে ধরায়, শশী, ছড়াও কী এ ।
ইন্দ্রপুরীর কোন্ রমণী বাসরপ্রদীপ জ্বালো ।।
আমি কী গান গাব যে ভেবে না পাই-
মেঘলা আকাশে উতলা বাতাসে খুঁজে বেড়াই ।।
বনের গাছে গাছে জেগেছে ভাষা ভাষাহারা নাচে-
মন ওদের কাছে চঞ্চলতার রাগিণী যাচে,
সারাদিন বিরামহীন ফিরি যে তাই ।।
আমার অঙ্গে সুরতরঙ্গে ডেকেছে বান,
রসের প্লাবনে ডুবিয়া যাই ।
কী কথা রয়েছে আমার মনের ছায়াতে
স্বপ্নপ্রদোষে- আমি তারে যে চাই ।।
আহা, তোমার সঙ্গে প্রাণের খেলা, প্রিয় আমার, ওগো প্রিয়-
বড়ো উতলা আজ পরান আমার, খেলাতে হার মানবে কি ও।।
কেবল তুমিই কি গো এমনি ভাবে রাঙিয়ে মোরে পালিয়ে যাবে
তুমি সাধ ক’রে, নাথ, ধরা দিয়ে আমারো রঙ বক্ষে নিয়ো-
এই হৃৎকমলের রাঙা রেণু রাঙাবে ওই উত্তরীয়।।
আজি গোধূলিলগনে এই বাদলগগনে
তার চরণধ্বনি আমি হৃদয়ে গণি-
‘সে আসিবে’ আমার মন বলে সারাবেলা,
অকারণ পুলকে আঁখি ভাসে জ্বলে।।
অধীর পবনে তার উত্তয়ীয় দূরের পরশন দিল কি ও-
রজনীগন্ধার পরিমলে ‘সে আসিবে’ আমার মন বলে।
উতলা হয়েছে মালতীর লতা, ফুরালো না তাহার মনের কথা।
বনে বনে আজি একি কানাকানি,
কিসের বারতা ওরা পেয়েছে না জানি,
কাঁপন লাগে দিগঙ্গনার বুকের আঁচলে-
‘সে আসিবে’ আমার মন বলে।।
আজ জ্যোত্স্নারাতে সবাই গেছে বনে
বসন্তের এই মাতাল সমীঁরণে ।।
যাব না গো যাব না যে, রইনু পড়ে ঘরের মাঝে-
এই নিরালায় রব আপন কোণে
যাব না এই মাতাল সমীরণে ।।
আমার এ ঘর বহু যতন ক’রে
ধুতে হবে মুছতে হবে মোরে ।
আমারে যে জাগতে হবে, কী জানি সে আসবে কবে
যদি আমায় পড়ে তাহার মনে
বসন্তের এই মাতাল সমীরণে ।।
তোমারি ঝরনাতলার নির্জনে
মাটির এই কলস আমার ছাপিয়ে গেল কোন ক্ষণে ।।
রবি ওই অস্তে নামে শৈলতলে,
বলাকা কোন্ গগনে উড়ে চলে –
আমি এই করুণ ধারার কলকলে
নীরবে কান পেতে রই আনমনে
তোমারি ঝরনাতলার নির্জনে ।।
দিনে মোর যা প্রয়োজন বেড়াই তারি খোঁজ করে,
মেটে বা নাই বা মেটে তা ভাবব না আর তার তরে ।
সারাদিন অনেক ঘুরে দিনের শেষে
এসেছি সকল চাওয়ার বাহির-দেশে,
নেব আজ অসীম ধারার তীরে এসে
প্রয়োজন ছাপিয়ে যা দাও সেই ধনে
তোমারি ঝরনাতলার নির্জনে ।।